পাঁচশো টাকার নোট (দ্বিতীয় পর্ব) : কাজী আব্দুল হালিম সানি

হিলা তার দিকে তাকিয়ে হাত নাড়তে থাকেন, কথকের মনে আবার হাজতবাসের স্মৃতি মাথাচারা দিয়ে ওঠে...
মহিলা কাছে আসতে থাকে তার, কিন্তু এ তো আগের দিনের ওই ইভটিজিং এর কেস করা মহিলা! বেশ অবাক হয়ে যায় কথক;

তারপর...


“পাঁচশো টাকার নোট”
দ্বিতীয় পর্ব


Img. Loading...

 অলীক চেতনা পত্রিকা দপ্তরে সর্বাধিক বাৎসরিক ভিউপ্রাপ্ত লেখাটির জন্য থাকবে আকর্ষণীয় উপহার, এছাড়া সর্বাধিক কমেন্টপ্রাপ্ত লেখাটির জন্য রয়েছে বিভিন্ন পত্রিকায় সরাসরি জায়গা করে নেওয়ার সুযোগ। আপনিও লেখা পাঠাতে পারেন উপরের মেনুবারে দেওয়া অপশনে  গিয়ে। বিশদে জানতে যোগাযোগ করুন এই নম্বরে: 8013850709

 সংলগ্ন তথ্য : 

ব্লগ কমিউনিটি
আমাদের সমগ্র দলের বিষয়ে জানতে হলে এখনই চলে
যান আমাদের পেজে।
লেখককে লিখুন
গল্পটি পড়ে লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
মেইল আইডি : kaziabdulhalimsunny01@gmail.com
কপিরাইট
লেখক এবং প্রকাশকের অনুমতি ছাড়া গল্পটির কোনোরূপ ব্যবহার বরদাস্ত করা হবে না,
প্রয়োজনে ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


 -: সূচীপত্র :- 




  • অলীক চেতনা পত্রিকা দপ্তর
  • সর্বশেষ আপডেট : ৬ ই নভেম্বর, ২০২০
  • শৌভিক দে



“পাঁচশো টাকার নোট  একটি ধারাবাহিক রচনা এখন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আপনি পড়তে পারবেন অলীক চেতনা পত্রিকা দপ্তরে । লেখাটি আমাদের দিয়েছেন আমাদের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের একজন তরুণ লেখক তথা গল্পকার কাজী আব্দুল হালিম সানি  মহাশয়। গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব নিজেরা পড়ুন এবং অন্যদেরকেও পড়ার সুযোগ করে দিন শেয়ারের মাধ্যমে।

  • সার-সংক্ষেপ :
  • কথকের মেয়েদের প্রতি এক চরম অনীহা প্রথম থেকেই, প্রথম পর্বের ঘটনায় তা আরো চরম আকার ধারন করে তার মনে। এই পর্বে পুনরায় তার সাথে দেখা হয়ে গেল এক মহিলার। কথকের মনে আবার হাজত বাসের ইচ্ছা জাগে, দারোগা সাহেবের সাথে গল্প করতে হবে যে!

  • লেখক-নামা :
  • নাম : কাজী আব্দুল হালিম সানি 
    বয়স :  ১৮
    জন্মস্থান : সুনামগঞ্জ, চন্দ্রপুর গ্রাম, তাহিরপুর উপজেলা, বাংলাদেশ
    মেইল আইডি : kaziabdulhalimsunny01@gmail.com 
    সম্পর্ক : লেখকের সাথে অলীক চেতনা পত্রিকা দপ্তরের পথ চলা শুরু হলো এই ধারাবাহিক গল্পটির হাত ধরে। আশা করি, এই সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হবে এবং দর্শকদের কাছে সুমধুর সম্পর্কের রূপ নেবে।
  • লেখক-কথা :
অলীক চেতনা পত্রিকা দপ্তর খুব দারুণ কাজ করছে। সাহিত্যে এই ধরণের কাজ আরো বেশি প্রয়োজন। সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করতে সাহিত্যিকদের সম্মান করা প্রয়োজন। তাদের লিখার যথার্থ মূল্যায়ন করা উচিত। অনেক নবীন লেখকরা লেখা প্রকাশ করার উপযুক্ত জায়গা খুুঁজে পান না। অলীক চেতনা পত্রিকা দপ্তর তাদেরকে নিয়েও দারুণ সব কাজ করছে। অলীক চেতনা পত্রিকা দপ্তরের প্রতি ভালোবাসা ও শুভকামনা রইলো।।

  • প্রয়োজনীয় ট্যাগ :  অলীক চেতনা পত্রিকা দপ্তর, ধারাবাহিক গল্প, কাজী আব্দুল হালিম সানি, অনলাইন গল্প,  বাংলা সাহিত্য, পাঁচশো টাকার নোট, দ্বিতীয় পর্ব, ই-স্টোরি।


দুপুর দুইটায় আমার ঘুম ভাঙ্গলো।
বিছানায় থেকেই আবিষ্কার করলাম কেউ একজন আমাকে উদ্দেশ্য করে চা হাতে আসছে। অনুমান করতে পারছি না কে হতে পারে। ইদানীং অনুমান না করতে করতে অনুমান শক্তি কমে গেছে।
দেখলাম, আনিস ভাই।
মেসের বড় ভাই তিনি। পড়াশোনা নাই অযথাই পড়ে আছেন এই মেসে। টুকটাক রাজনীতি করেন, তবে সুবিধা করতে পারেন বলে মনে হয় না।

"কিরণ কি মিয়া এত লেইট কইরা ঘুম থাইকা উঠলে কি পাওয়ার পাইবা?"

"ভাইয়া আমি আসলে পাওয়ার পেতে চাই না। আপনি কেনো ভাইয়া সবসময় পাওয়ার-পাওয়ার করেন?"

"হুনো মিয়া একটা কথা কই, পাওয়ার ছাড়া জীবনে কোনো দাম নাই। পাওয়ার ছাড়া কারো উপকারও করা যায় না। নিজে যে ভালা, হেইডাও তুমি পাওয়ার ছাড়া বুঝাইতে পারবা না। ছোট মানুষ, আর বেশি কইলাম না, লোড নিতে পারবা না। এই লও, চা খাও।"

"ভাইয়া চা কেনো আনলেন আমার জন্যে বুঝলাম না।"

"চা আনলাম এতে অত কাহিনীর কি আছে! তুমি ছোট ভাই, চা খাউনের একটু বদ-অভ্যেস আছে তাই নিয়া আইলাম। এইখানে না পাইলে তো টং-এর দোকানে গিয়া খাইবা। ট্যাকা খরচ অইবো; আরেকটা ঝামেলা মাইয়াগো ইভ টিজিং করবা, হাজতে হান্ধাইবো। তখন তো আমারই আনা লাগবো ছাড়াইয়া।"

আনিস ভাই আমাকে সেই মধুর স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন। আহ! সেদিন কি গল্পটাই না করেছিলাম দারোগা সাহেবের সাথে। আবার যেতে হয় একদিন।

"এই মিয়া চা খাও। আর হুনো আমারে 'ভাইয়া' ডাকবা না। এইসব হুনলে শরীলো জ্বালা উঠে। বাচ্চারা এমন ডাকে।  আরো একটা প্রজাতি ডাকে। এইটা হইল মাইয়া প্রজাতি। তুমি দুইটার কোনোটায়ই পড়ো না। তাই ডাকবা না। ভাই ডাকবা।"

" আচ্ছা ভাইয়া, ডাকবো না। "

আমি টং-এর দোকানে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছি। একটু দূরে থাকা একজন ভদ্রমহিলা আমার দিকে হাত নাড়ছে। আমি আগ্রহ দেখালাম না। সুদর্শন ছেলে দেখলে এ যুগের মহিলারা যা করে আরকি! সব দেখলে চলে না। 

আমি যথেষ্ট সুদর্শন, এটি আমার কথা না। আনিস ভাইয়ের কথা। উত্ত্যক্ত যেমন কিছু সংখ্যক ছেলে করে এমন কিছু সংখ্যক মেয়েও আছে। যারা অতি আগ্রহের সাথে এবং দায়িত্ব নিয়ে কাজগুলো করে থাকে।
আমি চায়ের কাপে চুমুক দিলাম। ইদানীং ফরিদ চাচার চায়ে স্বাদ পাওয়া যাচ্ছে। তারমানে চাচীর সাথে ঝগড়া হচ্ছে ভালো। আমার থিওরি হলো, কোনো বিবাহিত পুরুষ যদি কোনো কাজ অতি গুরুত্বের সাথে আগ্রহ নিয়ে করে, তাহলে বুঝতে হবে তার স্ত্রীর সাথে ঝগড়া হয়েছে। কারণ, স্ত্রীর সাথে ঝগড়া হলেই ঐ পুরুষের মন ভীষণ খারাপ হয়। একটা মানুষের সাথে এতটা সময় কাটান, এত চেনার কথা তাকে, তাও কি না ঝগড়া হয়! তখন এই বিরহ ভুলতে অন্যকিছুতে ঐ পুরুষ গভীর মনোযোগ দেন। ফলে কাজটা ভালো হয়।
আমাকে অবাক করে দিয়ে ঐ মহিলাটি আমার খুব কাছে চলে আসলো। আমি আবিষ্কার করলাম উনি কোনো মহিলা নন। উনি সেইদিনের মেয়েটি। যার জন্যে আমাকে হাজতে যেতে হয়েছে।

"এই যে আসুন এদিকে!"

আমি জবাব দিলাম না।

"আসতে বললাম আসা হচ্ছে না কেন?"

আমি একটু আগ্রহের সাথে জিজ্ঞেস করলাম, "কে আপনি?"

"আমায় চিনেন না? একটা চিৎকার করবো? আবার হাজতে দাওয়াত পাবেন।"

"আপু প্লিজ একটা চিৎকার করুন।"

"আরে পাগল তো। চিৎকার কেনো করবো?"

"আমি হাজতে যেতে চাই।"

"হাজতে কেনো যেতে চাইছেন? ওখানে কি খাবার দেয়? নাকি মালিশ করে দেয়?"

"দুটোর কোনোটাই দেয় না তবে আমার যেতে হবে। তবে চিৎকার করে বইলেন কেইসটা যেন আগেরটাই হয়। আগের কেইসটা মনে আছে তো? ইভ টিজিং।"

মেয়েটি মুখে আচল চাপা দিয়ে হাসছে। চোখে লেপ্টানো কাজল। বিন্দু সদৃশ টিপ। হালকা নীল রঙের শাড়ি। অপলক দৃষ্টি। হাতের কাচের চুড়ির টুংটাং শব্দ। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে এই মেয়েটি আমার বহু জনম জনমের পরিচিত। মেয়েতে আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। সবাই অবশ্য সেজন্যে আমাকে অসুস্থ বলে। আমি গায়ে মাখি না। 
এই মেয়েটির সৌন্দর্য আমায় টানেনি। কিন্তু তার এই ট্রেডিশনাল লুক আমায় ভীষণভাবে আকৃষ্ট করেছে। মনে হচ্ছে, আজ সে আমায় আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যেই এসেছে। 

"না। আমি চিৎকার করবো না। আপনাকে হাজতে যেতে হবে না। আচ্ছা বলুন না কেনো যেতে চাইছেন?"

"আমার কথা কেউ শুনে না। আমার কথা বলতে ভীষণ ইচ্ছে করে। আমি কারো সাথেই গল্প করতে পারি না। কেউ আমার গল্প শুনেনা। কিন্তু, দারোগা সাহেব আমার গল্প শুনেছেন। আমার সাথে গল্প করেছেন। তাই বারবার যেতে চাই।"

"গল্প করেছে বলেই কি যেতে হবে? জায়াগাটা তো এতো ভালো না যে বারবার যাবেন। আচ্ছা শুধু গল্প করার জন্যেই তো যাওয়া লাগবে?"

"না আরো একটি কারণ আছে।"

"কি সেই কারণ?"

"আমার বলতে ইচ্ছে করছে না।"

"করতে ইচ্ছে না করলেও অনেক সময় আমাদের অনেক কিছুই করতে হয়। বলে ফেলুন।"

"আমি মেয়েদের অত্যধিক সম্মান করি। তাদের অসম্মান হয় এমন কোনো কাজ কখনই করি না। কিন্তু তাদের প্রতি আমার ছোটবেলা থেকেই ভীষণরকমের অনীহা। জীবনে অনেক বাজে অভিজ্ঞতা হয়েছে সেই কারণে মেয়েতে আমার তীব্র অনীহা। আর আমি অল্পতে সব বিশ্বাস করে ফেললেও, তাদের বিশ্বাস করি না।"

"হাতের পাঁচ আঙুল তো আর সমান হয় না। কিছু অভিজ্ঞতা তো ভালোও হতে পারে।"

"হাতের প্রত্যেকটা আঙুলই এমন বলবে। কারণ, বাকি আঙুলদের তুলনায় সে ব্যাতিক্রম। কিন্তু আমি কেনো বিশ্বাস করতে যাবো?"

সে কথা বলছে না। চুপ করে শুধু আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
"আমি দুঃখিত। আমি হয়তো আপনাকে অজান্তেই আঘাত করে ফেলেছি। এমনটা হয়ে থাকলে আমায় ক্ষমা করবেন। আমি সবাইকেই গুরুত্ব দেই, সম্মান করি।"

"আঘাত করেননি। আমার আগ্রহ হচ্ছে আপনার জীবনকাহিনী শুনতে। বলা যাবে কী? আর রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি চলেন কোথাও বসি।"

"না, বলা যাবে না। আর কোথাও বসাও যাবে না। মাফ করবেন আমায়।"

"কেনো বলা যাবে না?"

"সবকিছু জানার প্রয়োজন নেই। সব জানা হয়ে গেলে আগ্রহ মরে যায়। কিছু আগ্রহ থাকতে হয়। থাকুক কিছু আগ্রহ, নাহলে বাঁচার আনন্দ থাকে না। আগ্রহ থেকেই আনন্দের জন্ম।"

"আপনি বেশ অদ্ভুত। "

"এই পৃথিবীর সবাই অদ্ভুত। আচ্ছা আপনার নামটা তো জানা হলো না। বলা যাবে?"

"না বলা যাবে না। সবকিছু জানার প্রয়োজন নেই। সব জানা হয়ে গেলে আগ্রহ মরে যায়। কিছু আগ্রহ থাকতে হয়। থাকুক কিছু আগ্রহ নাহলে বাঁচার আনন্দ থাকে না। আগ্রহ থেকেই আনন্দের জন্ম।"

আমার কথাই আমাকে বেক করলেন তিনি। আমার বেশ আনন্দ লাগছে।

"আমার নাম স্পিতা।"

আমি হেসে চলে আসছি। উনি পেছন থেকে ডাক দিলেন, "কিরণ সাহেব, স্পিতা নামের অর্থ কি জেনে যাবেন না?"

আমি অবাক হলাম! উনি আমার নাম কি করে জানলেন। আমার নাম জানা তেমন কঠিন কোনো কাজ না। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। ইদানীং আমি তুচ্ছ বিষয়ে অবাক হচ্ছি। একসময় হয়তো আমার অবাক হওয়ার ক্ষমতাই নষ্ট হয়ে যাবে।
আমি পিছন ফিরে তাকালাম। দেখলাম সহস্রগুণ আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছে সে।
আমি একটু হাসলাম।
কেনো হাসলাম জানি না। সব হাসির কারণ থাকে না।

(পরবর্তী পর্ব শীগ্রই আসছে...)

-: চলবে :-

কাজী আব্দুল হালিম সানি বাবুর লেখা গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব পড়ে আপনার যদি ভালো লাগে, তাহলে অবশ্যই পোস্টের নিচে কমেন্ট করে জানাবেন আমাদের, যাতে করে উনি  পরবর্তী পর্ব শীগ্রই আমাদের ব্লগে লেখেন। 
ব্লগে আরও নিত্য নতুন গল্প-কবিতা সকলের আগে পড়তে এবং বিজ্ঞাপন এড়াতে অলীক চেতনা পত্রিকা দপ্তরকে এখনই বিনামূল্যে সাবস্ক্রাইব করে মেম্বার হয়ে থাকুন।
এখন নিচের শেয়ার অপশনগুলি থেকে শেয়ার করে অন্যদেরকেও পড়ার সুযোগ করে দিতে পারেন আপনি।

প্রকাশক : শৌভিক দে
প্রকাশনার তারিখ : ৬ ই নভেম্বর, ২০২০

Souvik Dey

Hello. My name is Souvik Dey. I am a B.Tech. 3rd year student. I did my diploma in civil engineering and currently pursuing BTech in Computer Science. My team and I run this blog together. Don't forget to share these articles with your friends. Thank you.

Post a Comment

Thank you for your valuable time.
We are fond of your comments.(but, do not spam)

Previous Post Next Post