মুখোমুখি ধারাবাহিকের পঞ্চম পর্ব পড়ুন অলীক চেতনা পত্রিকা দপ্তরে, লিখছেন লেখক দেবদাস কুুুণ্ডু। প্রতি মঙ্গলবার থাকছে শুধুমাত্র আপনাদের জন্য…
“গল্প : মুখোমুখি”
আগে যা ঘটেছে…
বিনোদনের তিন দিন :
সোমবার
কাবেরী তালুকদারের “পলাশী ও আমি”
মঙ্গলবার
দেবদাস কুুুণ্ডুর “মুখোমুখি”
বুধবার
শৌভিক দে-র ছোট গল্প ও কমিক সিরিজ
পঞ্চম পর্ব
সংগীতার কথা ঠিক। সাহিত্যের ছাত্রী। পাঠ্য বিষয়ে বাইরে পড়াশুনা আছে। কখন এত সময় পায় মেয়েটা? অনির্বাণ ভাবল যখন সে লেখালেখি শুরু করল, তখন তার কোচিং-এর নাম ছড়িয়ে পড়েছে। “বাপীদার কোচিং”। তার ডাক নাম “বাপী”। ব্যাচের পর ব্যাচ পড়ায়। আদর্শ শিক্ষকের জীবনযাপন করে। তার আসে পাশে যা দেখে, অনুভবে যা ধরা পড়ে, কিংবা কল্পনায় যা আসে তাকে শব্দের শরীর দিয়ে গল্প তৈরি করে। তার জীবনের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা, বিশেষ করে যৌনতা নিয়ে সে কোনদিন একটি শব্দও খরচ করেনি। কেন করল না? যৌন অভিজ্ঞতা তো তার জীবনে ছিল। সেই দিনের পর স্বপ্নার জন্য তার অসহ্য যন্ত্রণার মধ্যে দিন গেছে। কই কখনও মনে হয়নি এটা নিয়ে গল্প লেখা যায়! সে কি সাহসের অভাব? নাকি আদর্শ শিক্ষকের পদস্খলন ঘটবে এই ভয়ে!
অনির্বাণকে গাছের মতো নির্বাক বসে থাকতে দেখে, দ্বিতীয় সিগারেটটা শেষ করে সংগীতা বলে, ‘তুমি তো আমাদের কাছে অনেক খোলামেলা। আমার প্রশ্নে তুমি একটু অস্বস্তিতে পড়েছ, না!’
অনির্বাণ প্রবলভাবে মাথা নাড়াতে গিয়েও পারে না, আমতা আমতা করে বলে, ‘সেভাবে কোনদিন বিষয়টা নিয়ে ভাবিনি?’
‘তবে তোমার গল্পে পজিটিভ দিক আছে।’ সংগীতা বলে, ‘শুরুটা তোমার খুব ভালো। পাঠককে টেনে ধরতে পারো। গল্পের গতি খুব সাবলীল। একটা ফিলজফি এস্টাবলিশ করার চেষ্টা করো, সেটা বেশ ভালো। কিন্তু সব মানুষের জীবনে কি ফিলজফি থাকে? মানুষের জীবন তো কতগুলি ঘটনার সমন্বয়ে গড়ে ওঠা বৃত্তান্ত…’
‘নিছক বৃত্তান্ত তো সাহিত্য নয়, ফিলজফি থাকবেই। সেটা প্রচ্ছন্নভাবে থাকলেই ভালো।’
‘তোমার গল্পে মানুষের স্বার্থপরতা, হিংস্রতা, বিপন্নতা দারুণ এসেছে। এই বিষয়গুলি কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করে যৌনতা। তার এতটুকু ইঙ্গিত নেই গল্পে।’
অনির্বাণের মেরুদণ্ড বেয়ে একটা যন্ত্রণা উঠে আসছে। কিসের যন্ত্রণা সে বুঝতে পারল না। তবু বলল, ‘তা ঠিক। সেই কারণেই তো তোকে পড়তে দিয়েছিলাম।’
সংগীতা হাসে, উঠে দাঁড়ায়, টি শার্ট ঠিক করে। হাত ঘড়ির দিকে তাকায়, ‘বাড়ি ফিরতে হবে। দেরি হলে মা চিন্তা করবে। তুমি একটা ট্যাক্সি ডাকো। আমাকে উল্টোডাঙ্গা নামিয়ে দিয়ে তুমি চলে যাবে বাগুইআটি।’
অনির্বাণ ট্যাক্সির সামনের সিটে বসতে যাচ্ছিল। সংগীতা নরম গলায় বলল, ‘সামনে কেন, পিছনে এসো।’
‘এখানেই ঠিক আছি।’
‘পিছনের সিটে একা বসলে মনে হবে বিলাসিতা করছি। আমি কখনও একা ট্যাক্সিতে উঠি না। ভয়ে নয়, সামর্থ নেই। ভাড়াটা তুমি দেবে। তাই পিছনে এসে বসো।’
সংগীতার অদ্ভুত যুক্তিমন্ত্রে দুর্বল হয়ে দরজা খুলে পিছনের সিটে চলে এলো অনির্বাণ। দু’জনের মাঝে সামান্য দূরত্ব থাকল। গাড়ি চলছে। সংগীতা চুল ঠিক করছে। গরম লাগছে বোধহয়, টি শার্টের একটা বোতাম নির্দ্ধিয়ায় খুলে ফেলল, স্তন উপত্যকা সামান্য উকিঁ দিল। ব্যাগ থেকে কি একটা বের করে খুলে দিল।
‘কি খেলি?’
‘চুইন্গাম। মুখে সিগারেটের গন্ধ পেলে মা বলবে, আবার নেশা করছিস…’
‘ঠিকই তো বলে। ইউনিভার্সিটি গিয়ে কি মাথাটা ঘুরে গেল?’
‘না, না। কলেজ লাইফেই নেশা শুরু হয়। এখন বেড়েছে।’
‘কেন?’
‘আসলে আমার যখন যন্ত্রণা হয় তখন খুব সিগারেট খেতে ইচ্ছে করে। ইদানীং ব্যাগেও রাখি দু’চারটে। আজই নেই।’
‘সেই যে মাথার যন্ত্রণা। পিজিতে তো অনেকদিন চিকিৎসা করালি। কমেনি?’
‘কমেছে। এটা মাথার নয়, বুকের যন্ত্রণা।’
অনির্বাণ একটু অবাক হয়, বলে, ‘কিসের যন্ত্রণা তোর? দেখে তো কোনদিন মনে হয়নি! বলিসওনি। তোর বয়ফ্রেন্ড কেমন আছে? ও কি কলেজে পড়াচ্ছে?’
সংগীতা নির্মোহ গলায় বলে, ‘পড়াচ্ছে। আমিও একটা কোচিং-এ অনার্সের ক্লাস নিচ্ছি। নিজের টিউশন, ইউনিভার্সিটির ক্লাস, সময় দিতে পারছি না।’
‘কিন্তু প্রেমের জন্য তো সময় দিতেই হবে। প্রেম শরীর মন সব ঠিক রাখে।’
তবে তুমি স্বীকার করছো প্রেমের পিছনে শরীর আছে?’
ক্রমশ…
… সবচেয়ে সুন্দর কমেন্টদাতার জন্য রয়েছে সপ্তাহের শেষে বিশেষ সম্মান …
গল্পটি এখনই সম্পূর্ন পড়তে হলে চলে যান নিচের বক্সে দেওয়া ঠিকানায় :
প্রকাশক : শৌভিক দে
প্রকাশনার তারিখ : ২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১