ধারাবাহিক গল্প : মুখোমুখি (সপ্তম পর্ব)

মুখোমুখি ধারাবাহিকের সপ্তম পর্ব পড়ুন অলীক চেতনা পত্রিকা দপ্তরে, লিখছেন লেখক দেবদাস কুুুণ্ডু। প্রতি মঙ্গলবার থাকছে শুধুমাত্র আপনাদের জন্য…



গল্প : মুখোমুখি



Img. Loading…
 অলীক চেতনা পত্রিকা দপ্তরে সর্বাধিক বাৎসরিক ভিউপ্রাপ্ত লেখাটির জন্য থাকবে আকর্ষণীয় উপহার, এছাড়া সর্বাধিক কমেন্টপ্রাপ্ত লেখাটির জন্য রয়েছে বিভিন্ন পত্রিকায় সরাসরি জায়গা করে নেওয়ার সুযোগ। আপনিও লেখা পাঠাতে পারেন উপরের মেনুবারে দেওয়া অপশনে  গিয়ে। বিশদে জানতে যোগাযোগ করুন এই নম্বরে: 8013850709

  বিনোদনের তিন দিন : 

সোমবার
কাবেরী তালুকদারের “পলাশী ও আমি”
মঙ্গলবার
দেবদাস কুুুণ্ডুর “মুখোমুখি”
বুধবার
শৌভিক দে-র ছোট গল্প ও কমিক সিরিজ

  • অলীক চেতনা পত্রিকা দপ্তর
  • আপডেট : Happy New Year 2021
  • শৌভিক দে

  • লেখক পরিচিতি : 
Img Loading…

 সপ্তম পর্ব 

বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছে অনির্বাণ। সংগীতাই তাকে বিভ্রান্ত করে গেল। বাঙুর এ্যাভিনিউ  পেরিয়ে ট্যাক্সি ছুটছে। অনির্বাণ একটা সিগারেট ধরায়। রাস্তার দিকে তাকায়। আগের থেকে বেশি আলো ঝলমলে পরিবেশ। লন্ডন ঘড়ি একটু আগে পেরলো। কলকাতা লন্ডন হবে। কবে হবে জানে না অনির্বাণ। এই মুহূর্তে সিগারেটের ধোঁয়ার ভিতর স্পষ্ট হয়ে উঠল রূপা বৌদির মুখ। কোন লাবণ্য নেই মুখে। মাংস নেই শরীরে। এক ছেলের মা। সেই ছেলেকে পড়ায় অনির্বাণ। বেঙ্গল বোর্ড মিলের ফ্যাক্টরিতে চাকরি করেন রূপা বৌদির বর। ফ্যাক্টরি কোয়াটারে তারা থাকে। ছেলেকে পড়ানোর শেষে গল্প। হাত ছোঁয়াছুয়ি। তারপর একদিন শরীর বিনিময়। এরপর নিয়মিত। যখন তখন ডেকে পাঠাত ছেলেকে দিয়ে। স্বামী ঘরে প্রায় থাকতই না। ইউনিয়নের লিডারও বটে। তার কত ব্যস্ততা। একদিন অনির্বাণের ঘেন্না ধরে গেল। সে পড়াতে যাওয়া বন্ধ করে দিল। 
রূপা বৌদি এসে হাজির তার ঘরে।
‘তুমি পড়াতে যাচ্ছো না কেন?’
‘আমার সময় হচ্ছে না।’
‘নাকি সম্পর্ক রাখতে চাইছো না?’
অনির্বাণ সাহস নিয়ে সত্যি কথাটাই বলেছিল, ‘ঠিক তাই।’
রূপা বৌদির গলায় দৃঢ়তা, ‘এখন তা হবে না। প্রথমদিকে তোমার ভাবা উচিত ছিল। আমার স্বামী লোকাল কমিটির মেম্বার। তাকে বলে দিলে তুমি কিভাবে এখানে থাকবে, কোচিং করবে ভেবে দেখেছো একবার?’
‘তুমি বলতে পারবে এসব কথা তোমার স্বামীকে?’ খুব বিপন্ন আহত কোন প্রাণীর মতো কথাটা বলেছিল অনির্বাণ।
‘কিভাবে কতটা কি বলতে হবে আমি জানি।’
ট্যাক্সির ভিতর বিশুদ্ধ হাওয়া আসছে। আজ এখন অনির্বাণের মনে হচ্ছে, রূপা বৌদির হুমকি, কর্তৃত্ব, মিথ্যে বলা সবই তো যৌনতার জন্য। কেন সে তার গল্পে নিয়ে এলো না এসব? কি সব বানিয়ে বানিয়ে সে এতদিন গল্প লিখল? অবশ্য গল্প বানাতে হয়। সব লেখকই বানায়। তা হলেও নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা, ঘটনাকে তো একটু এদিক ওদিক করে লেখায় আনা উচিত ছিল!
কেন যেন ট্যাক্সির ভিতর ঘামতে থাকে অনির্বাণ। অস্থির লাগে। সিগারেট ফেলে দেয়।বুক পকেটে হাত দেয়। কলমটা হাতে নিয়ে ভাবতে থাকে কিছু গল্প তো এই কলম দিয়ে লিখেছে। আর কি দরকার আছে এই কলমটার? 
ফোনটা বেজে ওঠে হঠাৎ।
অনির্বাণ স্ক্রিনে দেখে সংগীতা।
‘হ্যাঁ বল। তুই বাড়ি পৌঁছে গেছিস?’
“কখন… খাওয়াও হয়ে গেছে। এখন বিছানায় শুয়ে তোমাকে ফোন করছি। মন দিয়ে শোন। আমাদের ছোট্ট ঘরটা তুমি দেখেছো? চৌকিতে আমি, দাদু, ঠাকুমা আর বোন শুই ঠাসাঠাসি করে। মেঝেতে মা-বাবা। একদিন হঠাৎ একটা চাপা কান্নার শব্দে আমার ঘুমটা ভেঙে গেল। কে কাঁদছে এত রাতে? আলোটা জ্বালিয়ে দেখলে হতো। তার আগে আমি স্পষ্ট বুঝতে পারলাম, মা কাঁদছে। মা কাঁদছে কেন? তখনই বাবার গলার শব্দ শোনা গেল, ‘ঐ ডাক্তার সাহাই আমার সর্বনাশ করেছে।’
মা কাঁদতে কাঁদতে বলছে, ‘তখন থেকে তোমাকে বোঝাতে চেষ্টা করছি, ডা. সাহা আমাকে বাঁচিয়েছে। সর্বনাশটা কোথায় করল?’ 
বাবা বলল, ‘কেন শুধু টিউমারটা বাদ দিলেই তো হতো। উনি জরায়ু বাদ দিতে গেল কেন?’ মা জানাল, ‘জরায়ু বাদ না দিলে ক্যানসার হতে পারে। আমার ক্যানসার হলে তুমি খুশি হতে?’ বাবা রেগে গেল, আমার সুখটা কে দেখবে? এই যে তোমার ইচ্ছে করছে না। মাত্র চল্লিশ বছর বয়সে এমনটা তো হতো না যদি জরায়ু থাকত। আমি কতদিন এভাবে উপোস করে চলব? মা বিপন্ন গলায় বলে, ‘তোমার কাছে আমি ক্যানসারের যন্ত্রণা নিয়ে তিল তিল করে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাই, তবু তোমার সুখ চাই। এতদিন যে সুখ দিলাম, দু’টো সন্তান দিলাম, সংসার করলাম, এগুলোর কোন মূল্য নেই?’
বাবা চাপা গলায় ক্ষোভ প্রকাশ করে, ‘এসব ন্যাকা ন্যাকা কথা রাখ। এখন বলো আমি কি করবো?’
মা’র কান্না হঠাৎ থেমে গেল, ‘আমি তোমার যৌনসঙ্গী শুধু! তুমি আমায় এতটুকু ভালোবাসোনি?’
বাবা বলল, ‘তুমি সুখ দিতে পারবে না, ভালবাসা চাইবে তা হয় নাকি!’
তুমি আমার কথা পরিষ্কার শুনতে পারছো তো?”


ক্রমশ…

… সবচেয়ে সুন্দর কমেন্টদাতার জন্য রয়েছে সপ্তাহের শেষে বিশেষ সম্মান …

  • গল্পটি এখনই সম্পূর্ন পড়তে হলে চলে যান নিচের বক্সে দেওয়া ঠিকানায় :


প্রকাশক : শৌভিক দে
প্রকাশনার তারিখ : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১
Souvik Dey

Hello. My name is Souvik Dey. I am a B.Tech. 3rd year student. I did my diploma in civil engineering and currently pursuing BTech in Computer Science. My team and I run this blog together. Don't forget to share these articles with your friends. Thank you.

2 Comments

Thank you for your valuable time.
We are fond of your comments.(but, do not spam)

Previous Post Next Post