শেষ অঙ্ক : ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক নিয়ে একটি সুন্দর গল্প

শেষ অঙ্ক

- শৌভিক দে


অডিও ভার্সন

রাত তখন প্রায় সাড়ে এগারোটা। চারিদিকের নিস্তব্ধ পরিবেশ যেন মিশকালো অন্ধকারকে আরো ঘন করে তুলছিল! ভালো করে কান পাতলে হয়তো শোনা যাবে জানালার ওপাশ থেকে ভেসে আসা ঝিঁঝিঁ পোকাদের স্লোগান।


জানলাটা বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে শৈবালদের, তাই ঘরের ভেতরে থেকে বাইরেটা আন্দাজ করা যথেষ্ট মুশকিল। কিন্তু, বহুদিন পর আজ হঠাৎই লোডশেডিং হয়েছে এ পাড়ায়। তাই, ঘর আর বাহির মিলেমিশে যেন একাকার হয়ে গেছে আজ।

খাটের উপর বসে মোবাইল ঘাটছিল শৈবাল। মোবাইলের চার্জ বোধ হয় এখন অনেকটাই কমে এসেছে! ভাবতে, না ভাবতেই নোটিফিকেশন ঢুকলো লো ব্যাটারির। আর সাথেসাথেই শৈবালের মনের অন্তঃস্থল থেকে থেকে একটা বিরক্তিসূচক আওয়াজ গোত্তা খেয়ে বেরিয়ে এলো;


শৈবাল : শ্চপ.....

তারপর একটা গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে মোবাইলটা বালিশের পাশে রেখে খাটের উপর শরীরটা এলিয়ে দিল।
ঘড়ির কাঁটার আওয়াজটা এখন স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে, টিক-টিক-টিক-টিক....
এভাবে ঠিক কতক্ষন কেটে গেল জানা নেই। শৈবালের চোখটাও একটু লেগে এসেছিল এরইমধ্যে।
ঠিক তখনই হুট করে পাশে রাখা মোবাইলটা বেজে উঠল।
ব্যাস! ঘুম-টুম সব উধাও।


শৈবাল

উফ্.....এত রাতে আবার কে কল করছে!(ফোনটা ধরে, কিছুটা ঘুমের ঘোরেই উত্তর দিল শৈবাল) হ্যালো! কে?


মৈত্রেয়ী :

হ্যাঁ শৈবাল, আমি মৈত্রেয়ী বলছি! ঘুমোলি নাকি?


নামটা শুনে শৈবাল এবার একটু ধাতস্থ হলো। ঘুমের রেশ ছিল বলেই হয়তো কল ধরার সময় মৈত্রেয়ীর নামটা ওর চোখে পড়েনি। অতঃপর, মোবাইল স্ক্রিনে একবার চোখ বুলিয়ে নিশ্চিত হলো সে। ততক্ষণে, ওপ্রান্ত থেকে আবার কথা ভেসে এলো,

মৈত্রেয়ী :

হ্যালো শৈবাল..... হ্যালো... হ্যালো!

শৈবাল :

হ্যাঁ-হ্যাঁ, শুনছি বল। এত রাতে!.....কি ব্যাপার! (প্রবল বিরক্তি সহকারে সে বলে উঠলো।)

মৈত্রেয়ী :

কি ব্যাপার মানে!...... তুই জানিস না?

শৈবাল :

চ্যাপ! কী জানব! আশ্চর্য ব্যাপার..... ফোনটা তো তুই করলি। আমি কি করে জানব, তুই কি বলবি! (তার বিরক্তি ক্রমশ বাড়তে লাগলো)

মৈত্রেয়ী :

আমি ভাবছিলাম, এতক্ষণে তুই খবরটা পেয়ে গেছিস! তা, এখন তো দেখছি তুই কিছুই জানিস না।

শৈবাল :

না, আমি কিছুই জানি না। তুই কি বলবি বল!

মৈত্রেয়ী :

বিল্টু স্যার তো আজ ভোরে মারা গেছেন।

শৈবাল :

কোন স্যার ? (বিরক্তির সুরে সে বলল)

মৈত্রেয়ী :

আরে তোরা যে স্যারের কাছে নাইন-টেনে অংকের টিউশন পড়তিস। বিল্টু স্যার......

শৈবালের বুকটা এবার ছ্যাঁত করে উঠলো। কি বলছে কি মৈত্রেয়ী! বিল্টু স্যারের তো তেমন বয়স হয়েছে বলে মনে হয় না! আর তাছাড়াও সে নিজে বিল্টু স্যারের স্টুডেন্ট। সে জানতে পারল না, আর মৈত্রেয়ী জেনে গেল! এটা কখনই সম্ভব নয়! শৈবাল এই ভেবে নিজের মনকে সান্ত্বনা দিয়ে মৈত্রেয়ীকে একটা ধমক দিল;


শৈবাল :

 রাত-বিরেতে ইয়ার্কি হচ্ছে! শোন মৈত্রেয়ী, এমনিতেই কারেন্ট নেই সন্ধ্যা থেকে.......আর মোবাইলেও চার্জ নেই......এসব বাজে কথা বলে চার্জ খরচ করার ইচ্ছে আমার নেই। আর শোন, মানুষের মৃত্যু নিয়ে ইয়ার্কি মারবি না কখনও। (সে বেশ রেগে গিয়েই বলল কথাটা)

বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মজা করাটা যে মৈত্রী অভ্যাসের মধ্যে পড়ে, সেটা শৈবাল বরাবরই জানত। কিন্তু, বিল্টু স্যারকে নিয়ে এমন একটা বিচ্ছিরি মজা করবে, সেটা শৈবাল আন্দাজ করতে পারেনি বলেই হয়তো প্রথমে বুকটা কেঁপে উঠেছিল তার।

শৈবাল কথা শেষ করে ফোনটা রাখতে যাচ্ছিল, অমনি মৈত্রেয়ী আবার বলে উঠলো,

মৈত্রেয়ী

আরে শৈবাল বোঝার চেষ্টা কর! আমি ইয়ার্কি মারছি না। আমি ভেবেছিলাম, তুই অন্তত জানবি। সকালে মা বাজার করে ফেরার সময় খবরটা নিয়ে আসে। আমিও তখন বিশ্বাস করিনি। কিন্তু, দুপুরের দিকে তোদের সাথে পড়ত সঙ্গীতা বলে মেয়েটা আমাকে ফোন করে পুরো ঘটনাটা বলে। ও নাকি আজ বিল্টু স্যারের বাড়ির সামনে দিয়ে আসছিল, সে সময় ও স্যারের বডি দেখতে পায় বাড়ির সামনে শুইয়ে রাখা অবস্থায়। ওর কথা শুনেই আমি পুরোপুরি নিশ্চিত হই।


শৈবালের কেন জানি মনে হচ্ছিল, চারিদিকের বাতাসটা যেন গুমোট হয়ে আসছে ক্রমশ! তার দম বন্ধ হয়ে আসছিল ধীরে ধীরে। শৈবাল কোনো মতে গলার আওয়াজ বের করে বলল,

শৈবাল :

তুই সত্যিই জানিস!

মৈত্রেয়ী :

হ্যাঁ রে, এটাই সত্যি। শুনেছি কিডনি ফেইল করেছে।

শৈবাল

কিন্তু এটা কি করে সম্ভব!

মৈত্রেয়ী :  

অরিজিৎকে ফোন করেছিলাম। ও বলল, ওরা কয়েকজন কাল সকাল এগারোটার দিকে স্যারের বাড়ি যাবে। তুই আসলে, আমিও ভাবছি তোর সাথে যাব।
শৈবালের চোখ এখনও বিস্ফারিত, সে যেন কিছুই শুনছে না। জানলার পাশে তখনও ঝিঁঝিঁ পোকাদের উৎসব চলছে।শৈবালের উত্তর না পেয়ে মৈত্রেয়ী আবার বলল,

মৈত্রেয়ী :

হ্যালো! শৈবাল, তুই কি যাবি? হ্যালো!

মৈত্রেয়ীর ডাক কানে যেতেই শৈবাল একটু অন্যমনস্ক ভাবি উত্তর দিল,


শৈবাল :

অ্যাঁ..... হ্যাঁ-হ্যাঁ যাবো। (সে তোতলিয়ে  উত্তর দিল)

মৈত্রেয়ী :
 
তাহলে ১১টায় স্যারের বাড়ির সামনে দাঁড়াস।  যদিও আমি তোদের স্যারের কাছে পড়িনি, তাও পাড়ার মানুষ হিসেবে যাওয়া দরকার। ঠিক আছে তাহলে, গুড নাইট....

ফোনটা কেটে গেছে অনেকক্ষন হলো। এইমাত্র শেষবারের মত আওয়াজ করে সুইচড অফ্ হয়ে গেল। চার্জটা একেবারেই শূন্য হয়ে গেছে। এমনিতেই চার্জ পুরোপুরি শেষ হয়ে গেলে শৈবালের ফোনটা ডেড হয়ে যায়। দোকানে না নেওয়া অবধি চার্জ দিয়েও অন করা যায় না। কিন্ত, সকাল না হওয়া পর্যন্ত এভাবে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকলে যে ফোনটার কি হবে! আদৌ কি ফোনটা আর অন করা যাবে!

সে চিন্তা অবশ্য শৈবালের মাথায় ঘুরছে বলে মনে হয় না। তার শুধু মনে হতে লাগলো, কে যেন বাতাস থেকে অক্সিজেন শুষে নিচ্ছে ধীরে ধীরে, দম আটকে আসছিল শৈবালের, সে মুহূর্তের মধ্যে লাফ দিয়ে বন্ধ জানালাটার কাছে গেল, তারপর একটানে পাল্লা দুটো হাঁ করে খুলে দিল।

বাইরেটা এখনও নিস্তব্ধ, যে বাতাসটুকুর আশায় শৈবাল জানলা খুলেছিল, দূর-দুরান্তের তার দেখা মেলে না। উপরন্তু তার মনে হতে লাগলো, যেটুকু শ্বাস-বায়ু তার এই ছোট্ট ঘরে ছিল, সেটুকুও যেন এবার এক বিশাল উন্মুক্ত ঘরের চার কোণায় ছড়িয়ে পড়েছে!


শেষমেশ এই অদ্ভুত পরিস্থিতির কাছে হার স্বীকার করে শৈবাল জানলার পাল্লায় হেলান দিয়ে বসে রইল।
জানলার ওপ্রান্তে এখন দু-একটা আলো মিটমিট করছে, বোধ হয় জোনাকি হবে!
শূন্য দৃষ্টিতে শৈবাল দেখতে পাচ্ছে, তার ছোটবেলা, ক্লাস নাইনের বীজগণিত, জ্যামিতিবক্স, বন্ধু-বান্ধব, পাঁচিলের গায়ে হেলিয়ে রাখা সাইকেল, টিউশনের সেই ছোট্ট ঘর, আরও কত কি!

কিন্তু, বিল্টু স্যার! স্যারকে তো কোথাও দেখা যাচ্ছে না! সে দেখতে পেল, মাটিতে শোয়ানো আছে ওই ছোট্ট ব্ল্যাকবোর্ডটা, কয়েকটা রঙ-বেরঙের চকও আছে তার উপর শোয়ানো। শুধু স্যারের জায়গাটাই কেমন যেন খালি খালি ঠেকছে!

ঘোরের মধ্যে শৈবাল ডাকলো,

শৈবাল :

স্যার! ....আপনি.... আপনি কোথায় স্যার! (মুখের ভেতরে জড়ানো কথা)

ওপাশ থেকে যেন নিঃশব্দে উত্তর আসে,

বিল্টু স্যার

আজ যে আমার ছুটি রে........... ছুটি......(একটু হাসলেন)




বেলা তখন প্রায় দশটা। বিল্টু স্যারদের বাড়ির গেটটা আজও একইভাবে আটকানো আছে। বাইরে থেকে দেখলে মনেই হয় না গতকাল কিছু একটা অঘটন ঘটে গেছে এই বাড়িতে। প্রায় ৬০ বছর আগে তৈরি এই বাড়িটার রং অনেকটাই চটে গেছে আজ। দোতলার উপরে নতুনভাবে একটা ঘর তোলা হয়েছে, কিন্তু সেটার বাইরের দেওয়ালে এখনও প্লাস্টার হয়নি। মেইন রাস্তার সামনের দিকে দুটো গেটের একটা প্রায় জীর্ণ অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে, ওই গেটটা দিয়েই এককালে শৈবালরা সাইকেল নিয়ে ঢুকত সামনের ছোট্ট উঠোনে। সেখানেই পাঁচিলের গায়ে সাইকেলগুলো হেলান দিয়ে রাখতো ওরা।
মৈত্রেয়ী বা অন্যান্যদের কাউকে না দেখতে পেয়ে শৈবাল একবার হাত ঘড়িটার দিকে চোখ রাখলো। বড্ড তাড়াতাড়িই এসে পড়েছে সে। মৈত্রেয়ী তো বলেছিল সকাল এগারোটা। ওদের আসা অবধি অপেক্ষা করা উচিত কি! 
কি করবে এই ভাবতে ভাবতে, এমন সময় পেছন থেকে খুব পরিচিত একটা কণ্ঠস্বর ভেসে এলো শৈবালের কানে....


বিল্টু স্যার

কে রে? সৌরভ নাকি!

শৈবালের বুকটা ধড়াস করে উঠল একবার। আরে, এ ডাক তো..... শৈবাল কণ্ঠস্বর অনুসরণ করে পিছন ফিরতেই, তার চক্ষু চড়কগাছ!
খানিকটা তোতলিয়ে সে বলল,


শৈবাল :

স্যা...স্যার......আ.....আপ.....আপনি!

শৈবালের চোখের সামনে দাঁড়িয়ে আছে সেই চেনা পরিচিত রোগা লিকলিকে মানুষটা। চোখে সেই চশমাটা। বোঝা যাচ্ছে, অনেকক্ষন রোদে থেকে কালো হয়ে গেছে কাঁচটা। ঠোঁটের কোণে ওই অফুরন্ত হাসি, আর ওই একই চেনা পরিচিত ডাক। বিল্টু স্যার! হ্যাঁ স্যারই তো! শৈবালের চোখ মুখ দেখে বিল্টু স্যার হাসিটা চওড়া করে বললো,


বিল্টু স্যার :

তো সৌরভ, অনেক বড় হয়ে গেছিস দেখছি!

বিল্টু স্যারের ওই একই অভ্যেস। কিছুতেই শৈবালের আসল নামটা ধরে ডাকবেন না। কোথা থেকে একটা নতুন নাম জুড়ে দিয়েছেন শৈবালকে, সৌরভ!
শৈবাল এবার এদিক ওদিক দেখে বুঝতে পারলো, কীরকম একটা জঘন্য মশকরা মৈত্রেয়ী তার সাথে করেছিল কাল রাতে! সে নিজেকে ধাতস্থ করে হাসিমুখে স্যারের ভুল শুধরে বলল,

শৈবাল :

স্যার, সৌরভ না! শৈবাল। আপনি আবার ভুলে গেছেন।

বিল্টু স্যার :

ওরে ওই একই হলো! সৌরভ আর শৈবাল! আয় ঘরে আয়।
 

স্যারের পিছু পিছু সেই ছোট্ট টিউশনের ঘরটাতে গিয়ে বসল শৈবাল। মাধ্যমিক পাশ করে বেরোনোর পর যখনই সে স্যারের বাড়িতে এসেছে, তখনই স্যার তাকে দোতলায় নিয়ে যেত। কিন্তু, আজ স্যার নিচের তলার ওই ছোট্ট ঘরটায় নিয়ে গেলেন সৌরভ থুড়ি, শৈবালকে। এই ঘরেই কেটেছে শিক্ষক-ছাত্রের স্মৃতিময় দুটি বছর।
শৈবাল শুনতে পেল উপরতলা থেকে অজয় স্যারের সেই চিরপরিচিত অদ্ভুত মায়াবী গলার আওয়াজটা। অজয় স্যার, বিল্টু স্যারের দাদা, শৈবাল ওনার কাছে জীবনবিজ্ঞান পড়তে আসত। প্রথম দিন পড়তে এসে অজয় স্যারের গলাটা বড়ই অদ্ভুত লেগেছিল তার, যেমনি চড়া সুর, তেমনি জোরালো কণ্ঠ। পরবর্তী কালে শৈবাল বুঝেছিল, এই গলার কি মাহাত্ম! সে যে কি জ্ঞান অজয় স্যারের....তেমনি ছিল বোঝানোর ভঙ্গিমা। দুই ভাই  মিলে যেভাবে শৈবালদের পড়াতো, তাতে করে বছরের শেষে লেটার মার্কস না নিয়ে কেউ বাড়ি ফিরত না। ত্রুটির মধ্যে যা ছিল, সেটা বিল্টু স্যারের। রেগে গেলে উনি বড্ড তোতলাতেন। সে সময় তার দুবেলা যাতায়াত ছিল এবাড়িতে। এখন তো আর আসাই হয় না। কিন্তু, তাও যেন কোথাও একটা মায়ার টান জড়িয়ে আছে এ বাড়িটার সাথে। আগে পড়তে আসলে এই ঘরের সামনের বারান্দাতে বসে থাকতে দেখা যেত বিল্টু স্যারের বাবাকে। দেখা হলেই সব সময় শৈবালদের সাথে কথা বলতেন তিনি। সে যে কতরকমের কথা! ইতিহাস, ভূগোল, সাহিত্য....সব বিষয়েই যে তাঁর দারুন জ্ঞান ছিল, সেটা বুঝতে বাকি নেই শৈবালের। অথচ, তিনি ছিলেন সামান্য এক ব্রাহ্মণ। মাঝে মাঝে অজয় স্যারকে বিল্টু স্যারকে বলতেন,


বিল্টু স্যারের বাবা :

কিরে! এত ভালো ভালো সব স্টুডেন্টদের বকিস কেন তোরা!

আর ঠিক তক্ষুনি বাবার মুখের কথা টেনে নিতেন অজয় স্যার,

অজয় স্যার :

না না, এরা একটাও পড়াশোনা করে না! তুমি এদের মুখ দেখে কিচ্ছু ধরতে পারবে না....

এভাবেই শৈবালদের কেটে যেত পড়ার দিনগুলো। তবে স্যাররা কখনই ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকের কাছে নালিশ করতেন না কোনো বিষয় নিয়ে। শৈবালদের ব্যাচে এমন অনেক ছাত্রই ছিল, যারা পুরো বছর মাত্র ৫০০ টাকা বেতন দিয়েছে স্যারদের। কিন্তু, জ্ঞানতপক্ষে কখনই শৈবালের মনে হয়নি, ওই ছাত্ররা অবহেলিত হয়েছে স্যারদের কাছে। বরং, ওরাই বেশি নম্বর নিয়ে পাশ করত পরীক্ষাগুলোতে। সেই সময় চারিদিকে যখন টিউশনি নিয়ে রীতিমত ব্যবসা চলছিল, সেখানে শৈবলরা এবাড়িতেই খুঁজে পেয়েছিল তাদের প্রকৃত গুরুকে। শৈবালের কাছে এই বাড়ি ছিল স্বর্গের মতই পবিত্র এবং স্নেহময়।


স্বপ্ন রাজ্যে ঘুরতে ঘুরতে আবার স্যারের গলার আওয়াজ পাওয়া গেল, 


বিল্টু স্যার :

তারপর! কেমন আছিস?

শৈবাল :

হ্যাঁ স্যার , ভালই আছি। আপনি কেমন আছেন?

বিল্টু স্যার :

এখন ভালই আছি রে।  কিছুদিন অবশ্য একটু শরীর খারাপ ছিল...
তোরা তো আর আসিস না তোদের স্যারকে দেখতে....


শৈবাল স্যারের কথা বেশ লজ্জা পেল, সে মাথা নিচু করে বসে রইল। শৈবালকে ওভাবে চুপ করে থাকতে দেখে  বিল্টু স্যার নিজেই বলল,


বিল্টু স্যার :

আচ্ছা আর কষ্ট পেতে হবে না! ব্যস্ত থাকিস তো... বুঝি বুঝি।

স্যার যতই বলুক, শৈবালের মনে তখনও খচখচ করছিল বিষয়টা। নিজের শিক্ষাগুরুর জন্য বছরে এক ঘণ্টা সময় বার করতে পারে না তারা! কী নির্মম এই ছাত্রসমাজ.... 

যে মানুষটা সারা বছর নিজের ছেলের থেকেও বেশি তার ছাত্রদের জন্য ভেবে যায়, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সারাটা বছর শুধু শিক্ষা বিলিয়ে বেড়ায়, বছর শেষে তাদের আমরা কিই বা দিই! শুধু কটা টাকা দিয়েই আমরা সম্পর্ক ছিন্ন করে অন্য জগতে ঢুকে পড়ি...নতুন এক জীবনের আশায়। আর অতীতের এক সংকীর্ণ গলিতে পড়ে থাকেন আমাদের এই স্যার-ম্যাডামরা...

কেউ কেউ চাইলেও সেই গলি পথে ঢুকতে পারে না, সে পথে যে পুরনো গন্ধ... যদিও বা কোনক্রমে গলিতে ঢুকেছ, ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে গেছে...অনেক দেরি....

এসব ভেবে শৈবাল আর কথা বলতে পারে না। ওদিকে শৈবালকে কোনো কথা বলতে না দেখে বিল্টু স্যার নিজেই আবার বললেন,


বিল্টু স্যার

তোর মনে আছে! উপপাদ্য না পারলে আমি তোদের কি বকাই না বকতাম...আর তোরাও মুখ ভাঁড় করে থাকতিস!

স্যার কথাটা বলতেই শৈবালের মনে পড়ল, স্যার রেগে গেলে যে কি ভীষণ তোতলাতেন, তা বলার মত নয়। এবার সে মুচকি হেসে স্যারকে বলল,


শৈবাল :

স্যার, আপনি তো আমাদের ভালোর জন্যই বলতেন, তাছাড়া অমন একটু শাসন না করলে আমার তো আজও জ্যামিতির ভয় কাটিয়ে ওঠা হতো না!


বিল্টু স্যার

আচ্ছা অমিত কোনো অঙ্ক পারলে আর সেই অঙ্কটা তুই না পারলে, মুখটা অমন বাংলার পাঁচ করে রাখতিস কেন?

শৈবাল বেশ অবাকই হলো, স্যার এই ব্যাপারটাও লক্ষ্য করেছেন! আসলে শৈবাল কিছুতেই মানতে পারত না যে, অন্য কোনো ছাত্র স্যারের কাছে তার থেকে বেশি মেধাবী প্রমাণিত হবে... শৈবাল নিজের ওই ছেলেমানুষীর কথা ভেবে মনে মনে হেসে উঠলো, বলল,


শৈবাল :

স্যার , আপনি সত্যি করে বলুন তো, কে বেশি ভালো ছিল! আমি না অমিত?

বিল্টু স্যার একটু হেসে বললেন,

বিল্টু স্যার

ওরে তোরা সবাই ভালো ছিলিস আমার কাছে...কেউ একটু বেশি মনোযোগ দিতিস আর কেউ একটু কম...এই যা!

শৈবাল নাছোড়বান্দার মতো আমার জিজ্ঞেস করে বসল,

শৈবাল :

তাও স্যার আপনার কাছে কে বেশি মেধাবী মনে হত বলুন!

বিল্টু স্যার শৈবালের এমন উচ্ছাশা মেটাতে শেষমেশ বলেই ফেললেন,

বিল্টু স্যার :

তুই যদি আমায় খুশি করার জন্য অঙ্ক না করতিস, তাহলে আমি বেশি খুশি হতাম। তবে আমি তোর ইচ্ছাশক্তিকে অনেক বেশি শ্রদ্ধা করি। তুই যে ভাবে আমার কাছে পড়তে এসেছিলিস, আর পরে যা হয়েছিস, তাতে আমি সত্যিই গর্বিত...


স্যারের কথা শুনে,  শৈবাল বলল,

শৈবাল :

আমার পড়াশুনার প্রতি ভালোবাসা তো আপনি আর অজয় স্যার আরও বাড়িয়ে দিয়েছিলেন... নইলে আমি তো শুধু পড়ার জন্যই পড়তাম...

বিল্টু স্যারের সাথে কথা বলতে বলতে কখন যে আধঘন্টা কেটে গেল বুঝতেই পারলো না শৈবাল...
হাতঘড়ির দিকে চোখ পড়তেই শৈবাল টুল ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো।


বিল্টু স্যার

আরে আরে উঠছিস যে!

শৈবাল :

না স্যার, আরেকদিন আসব। আজ একটু তাড়া আছে।

এই বলে সে স্যারকে টুক করে একটা প্রণাম করে ঘর থেকে বেরিয়ে রাস্তায় উঠলো। বিল্টু স্যার তখনও পেছন থেকে বলছিল,


বিল্টু স্যার :

আসিস কিন্তু আবার! গল্প করব।


শৈবালের মনটা বেশ আনন্দে ভরপুর আজ। কতদিন বাদে সে এমন বুকভরা আনন্দ নিয়ে দিন শুরু করেছে। শুধু একটা ব্যাথা রয়ে গেল মনে, তার প্রিয় স্যারকে নিয়ে এমন ভাবে কেউ মজা করবে, সেটা সে মেনে নিতে পারছে না কিছুতেই।
এসব কথা ভাবতে ভাবতে কিছুদূর এগোতেই শৈবাল দেখতে পেল মোড়ের মুখটা থেকে বেড়িয়ে আসছে মৈত্রেয়ী। তাকে দেখে শৈবালের প্রচন্ড রাগ হলো। মনে হচ্ছিল, ছুটে গিয়ে একটা চড় মেরে আসে ওর গালে।
মৈত্রেয়ীর সাথে ওদেরই ব্যাচের কয়েকজন বন্ধুবান্ধব ছিল। শৈবাল মৈত্রেয়ীকে দেখেও না দেখার ভান করে হাঁটতে লাগল। সে ভেবেছিল, মৈত্রেয়ী তাকে ডাকলে ভালো মত কথা শুনিয়ে দেবে সবার সামনে।
কিন্তু, আশ্চর্যের বিষয় মৈত্রেয়ীও তাকে পাত্তা না দিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে গেল নিজেদের মধ্যে গল্প করতে করতে।


মৈত্রেয়ী :

কিভাবে হল রে এমন!

অরিজিৎ :

আরে আমিও তো জানিনা।

স্বর্নেন্দু :

খুব কম বয়সেই চলে গেলেন।

শৈবাল ওদের কথা গ্রাহ্য না করেই চলে যাচ্ছিল।
কিন্তু, তার হঠাৎ খেয়াল হলো, অজয় স্যারের সাথে তো দেখা হলো না! খেয়াল হতে না হতেই সে পিছন ঘুরে দেখল, মৈত্রেয়ীরা বিল্টু স্যারদের গেটের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। শৈবাল তখন হনহন করে ওদের দিকে ছুটে গেল। কিন্তু, কাছাকাছি যেতে না যেতেই শৈবাল যা দেখল, তাতে করে ওর সমস্ত কিছু গুলিয়ে যাচ্ছিল। এবার ওর মাথার ভিতরটা ঝিম ঝিম করে উঠল। সে দেখল, বিল্টু স্যারের স্ত্রী সাদা থানকাপড় পড়ে মৈত্রেয়ীদের সামনে দাঁড়িয়ে কান্না জড়ানো গলায় কিছু একটা বলছে। পাশেই উত্তরীয় গায়ে দাঁড়িয়ে আছে বিল্টু স্যারের ছেলে।
শৈবাল কী করবে কিছু বুঝতে না পেরে এগিয়ে গেল ওদের দিকে। ওরা বলছে,


স্যারের বউ :

তোমাদের স্যার যে চলে গেলেন বাবা!


অরিজিৎ :

কাঁদবেন না কাকীমা, কাঁদবেন না, জন্ম-মৃত্যু তো কপালের লিখন।

মৈত্রেয়ী এবার স্যারের ছেলেকে জিজ্ঞাসা করল,

মৈত্রেয়ী :

কি হয়েছিল ওনার?

ছেলে :

কিডনি ড্যামেজ হয়ে গিয়েছিল, ছয় মাস ধরে চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু, শেষরক্ষা আর হল না। বাবা চলে গেল আমাদের ছেড়ে।

স্বর্ণেন্দু :

চিকিৎসাটা তো পেয়েছেন। এরপর তো সবকিছু ভগবানের হাতে, কাঁদিস না ভাই।


 শৈবাল সবকিছুই শুনতে পাচ্ছিল রাস্তার এপারে দাঁড়িয়ে। কি হচ্ছে এসব! কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। 
সে ভাবতে লাগল এতক্ষণ সে কার সাথে ঘরে কথা বলছিল! ধীরে ধীরে সবটা পরিষ্কার হচ্ছিল ওর কাছে। দুমাস চিকিৎসায় ছিলেন স্যার, আর সেটা শৈবাল জানত না! এই কথাটাই ওর মাথা জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল।এবার সত্যিই কান্না পেয়ে গেল শৈবালের।
ঠিক তখনই কে একজন ওর কাঁধে হাত রাখল। মাথা তুলতেই সে দেখল পাশে বিল্টু স্যার দাঁড়িয়ে।


বিল্টু স্যার

কী রে! কাঁদছিস কেন?

শৈবালের মনে হলো, ওর চোখের সামনে যেন কোনো এক নাটকের দৃশ্য চলছে। তার সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদছে উত্তরীয় গায়ে দেওয়া স্যারের ছেলে, আর পিছনে দাঁড়িয়ে আছেন স্বয়ং বিল্টু স্যার।
শৈবালের মাথা কাজ করছে না। সে চেঁচিয়ে মৈত্রেয়ীকে ডাকল,


শৈবাল :

ওই মৈত্রেয়ী, কি বলছিস কি তোরা! এ..এই...এইতো, এইতো স্যার আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। কাকিমা, আপনি সাদা থান পড়ে আছেন কেন?

কিন্তু, কোথায়! কেউই তো তার কথা শুনছে না! তার গলার আওয়াজ কি তাহলে রাস্তার ওপার অবধি যাচ্ছে না! সে ক্রমশ অস্থির হয়ে উঠতে লাগল, অবশেষে সে বিল্টু স্যারের দিকে ঘুরে স্যারকে জিজ্ঞেস করল,


শৈবাল :

স্যার এগুলো কি হচ্ছে?

বিল্টু স্যার একটু হাসলেন....

বিল্টু স্যার :

এসব নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না। তুই এখন বাড়ি যা শৈবাল, তোকে আবার আসতে হবে।

শৈবাল : 

কিন্তু স্যার.....

এবার শৈবালের কাঁধে একটা চাপড় মেরে বিল্টু স্যার বললেন,

বিল্টু স্যার

বললাম তো! বাড়িতে যা।

স্যারের হাতের সেই চাপড় খাওয়া মাত্রই শৈবাল হকচকিয়ে উঠল। সে চোখ মেলে দেখল, তার মাথার উপর ঘরের পাখাটা ঘুরছে আস্তে আস্তে, দিনের আলো খোলা জানালা দিয়ে ওর মুখে এসে পড়েছে।
রাতে জানলাতেই হেলান দিয়েই ঘুমিয়ে পড়েছিল শৈবাল। কখন কারেন্ট চলে এসেছে সে টেরই পাইনি। শৈবাল বুঝতে পারল, সে এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিল।
বিছানা ছেড়ে উঠে আস্তে আস্তে সে নিজের ডেড মোবাইলটা চার্জে বসালো। যদিও সে জানতো, দোকানে না নেওয়া অবধি এটা অন হওয়ার নয়। দেওয়াল ঘড়িতে চোখ পড়তেই দেখল, বেলা এগারোটা বেজে গেছে।


শৈবাল :

ইস্! মৈত্রেয়ীকে তো বলেছিলাম এগারোটায় যাব। বড্ড দেরী হয়ে গেল।

 এই বলে সে মুখ হাত ধুতে গেল বেসিনে। বেসিনের আয়নায় নিজের মুখটা দেখে সে স্পষ্ট বুঝতে পারল, রাতে নিজের অজান্তেই কেঁদেছে সে। মুখ-হাত ধুয়ে ঘরে ফিরতেই শৈবালের চোখ গেল তার মোবাইলের আলোর দিকে।
আরে, কি আশ্চর্য! মোবাইলটা অন হয়ে আলো জ্বলছে।‌ এমন তো কোনোবার হয় না! সে এক পা লাফিয়ে গিয়ে মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখল, অনেকগুলো মিসড কল আর মেসেজ। সবগুলোই মৈত্রেয়ীর। শৈবাল চট করে কলব্যাক করল,


শৈবাল :

হ্যালো!

মৈত্রেয়ী :

কি রে! কোথায় তুই?

শৈবাল :

বেরোচ্ছি আমি। তুই পৌঁছে গেছিস?

 মৈত্রেয়ী

আমরা সবাই স্যারের বাড়ি সামনেই দাঁড়িয়ে। তুই জলদি আয়।

ফোন রেখে কোনোরকমে একটা জামা গায়ে চাপিয়ে বাজারের মধ্যে দিয়ে সাইকেলটাকে কাটিয়ে কুটিয়ে ৫ মিনিটের মধ্যে সে হাজির হলো শিব মন্দিরের সামনের রাস্তাটায়। রাস্তার ওপাশ থেকে মৈত্রেয়ী হাত তুলে ইশারা করছে তার উদ্দেশ্যে। শৈবাল এগিয়ে গেল তার দিকে। সে যত এগোচ্ছিল, ততই কেমন যেন মনে হচ্ছিল, একটু আগেই তো সে এখানে ছিল! মৈত্রীয়ীর সামনে গিয়ে সাইকেল থেকে নেমে সে আরও অবাক হলো। ঠিক একই চুড়িদার মৈত্রেয়ীর গায়ে, যেমনটা সে স্বপ্ন দেখেছে।


মৈত্রেয়ী :

কী রে! কোথায় ছিলি এতক্ষণ? 


শৈবাল পাশে তাকিয়ে দেখল অভিষেক দাঁড়িয়ে আছে। ওর পরনেও ঠিক একই ড্রেস! স্বপ্নের সাথে বাস্তব যেন হুবহু মিলে যাচ্ছে শৈবালের। কোনটা বাস্তব আর কোনটা স্বপ্ন সেটাই তার কাছে এখন অস্পষ্ট লাগছে।
বিল্টু স্যারের স্ত্রী-ছেলের সাথে দেখা করে শৈবালরা অজয় স্যারের কাছেও গেল একবার। সবাইকে সান্ত্বনা দিয়ে ওরা এবার বেরিয়ে এল বাড়িটা থেকে। স্যারের মা খুব কাঁদছিলেন। পরপর এক মেয়ে, এক ছেলেকে হারালেন এ বয়সে এসে। স্যারের বাবাকে এবারও দরজার পাশের চেয়ারটাতেই বসে থাকতে দেখলো শৈবাল। আজ প্রথমবার কোনো কথা বললেন না তিনি শৈবালের সাথে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে অরিজিৎ বলল,


অরিজিৎ

স্যার যে অসুস্থ ছিলেন, সেটাই জানতাম না আমি।

অভিষেক উত্তর দিল,

অভিষেক :

আরে আমি নিজেই তো জানতাম না। একই পাড়ায় থেকেও আমি জানলাম না, আর তোরা তো দূরে দূরে থাকিস!

এর ফাঁকে মৈত্রেয়ী বলে উঠলো,

মৈত্রেয়ী :

শৈবাল তো বিশ্বাসই করছিল না আমার কথা।

স্বর্ণেন্দু বলল,

স্বর্ণেন্দু :

আমরাও কি বিশ্বাস করতে পেরেছিলাম তখন! কাল নাকি অনিন্দিতা-নাতাশারাও এসেছিলো!

কথা বলতে বলতে ওরা অনেকটা এগিয়ে গেছে, শৈবাল তখন একটু পিছনে। ওর কানে যেন কোনো কথাই যাচ্ছে না, ও ভাবছে একটাই কথা, স্বপ্ন আর বাস্তব হুবহু এক হয় কি করে! তাও আবার আগে দেখা স্বপ্ন! ভাবতে ভাবতেই শৈবাল শুনতে পেল,

বিল্টু স্যার :

ওরে, অত ভাবিস না রে! এটা কি জ্যামিতির উপপাদ্য নাকি, যে প্রমাণ করতেই হবে! এখানে বামপক্ষ-ডানপক্ষ না মিললেও তোর নাম্বার কাটা যাবে না রে। 

শৈবাল পিছন ফিরে দেখে ওই দূরে শিব মন্দিরের মুখে দাঁড়িয়ে একটা রোগা লিকলিকে চেহারার লোক, রোদে পোড়া চশমা চোখে, তার দিকে চেয়ে হাত নাড়ছে আর বলছে,

বিল্টু স্যার :
আসিস কিন্তু আবার! চিন্তা নেই, এই অঙ্কটা না মেলাতে পারলেও বকবো না তোকে.....

সমাপ্ত
                            
Souvik Dey

Hello. My name is Souvik Dey. I am a B.Tech. 3rd year student. I did my diploma in civil engineering and currently pursuing BTech in Computer Science. My team and I run this blog together. Don't forget to share these articles with your friends. Thank you.

2 Comments

Thank you for your valuable time.
We are fond of your comments.(but, do not spam)

Previous Post Next Post