এনআরসি নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করলেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী

 N.R.C. - The National Register of Citizens.

উপরিউক্ত বিষয়টি নিয়ে ভারতবর্ষের বুকে নেহাত কম জলঘোলা হয়নি গত ১ বছর যাবৎ। করোনা আবহে পরিস্থিতি কিছুটা শীতল হলেও, ভেতরে ভেতরে এই নাম নিয়ে আজও অনেক মতামত ঘোরাঘুরি করছে লোকমনে।

Google Image Result for https://images.thequint.com/thequint/2020-02/3dbd050b-c837-4094-b3c4-0d7505265d7d/hero.gif

null

_______________________________________________

নাগরিক জাতীয় নিবন্ধন ( NRC ) : সমস্ত ভারতীয় নাগরিকদের জন্য বাধ্যতামূলক একটি রেজিস্টার, ২০০৩ সংশোধনী এর নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫ অনুসারে। এর উদ্দেশ্য হ'ল, ভারতের সমস্ত আইনী নাগরিককে নথিভুক্ত করা, যাতে অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত ও নির্বাসন দেওয়া যায়। এটি আসাম রাজ্যের জন্য প্রথম চালু করা হয় ২০১৩-১৪ সালে। ভারত সরকার ২০২১ সালের মধ্যে দেশের বাকি অংশে বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা করেছে। (As per Wikipedia)

_______________________________________________

NRC নিয়ে বহু ব্যক্তি বহু মতামত দিয়েছেন। এখন জেনে নেওয়া যাক আসলে একজন আইনজীবী এই বিষয় নিয়ে কি বক্তব্য!


 নিম্নে উল্লেখিত কথাগুলি আমরা সংগ্রহ করেছি Facebook থেকে। যিনি লিখেছেন, তিনি একজন আইনজীবী, এক বিশিষ্ট রাজনৈতীক দলের প্রধান। তিনি এনআরসি নিয়ে কী বলেছেন দেখুন :

“ নাগরিকত্ব আইন ২০১৯ এ আছে,------

২০১৪ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত যে সব হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ইত্যাদি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ (ভারতের নয়) ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছেন, তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু, সেখানে লেখা আছে, কতগুলো শর্ত ও বিধিনিষেধ। সেই শর্তসমুহ ও বিধি-নিষেধগুলো প্রকাশ করা হয়নি। এই শর্ত ও বিধিনিষেধগুলো কী কী ,তা না জেনে যারা দীর্ঘ উল্লম্ফন করছেন, তাদের আর কি বলি!

প্রথমতঃ নাগরিক তালিকায় নাম নথিভুক্ত করতে গেলে সবাইকে দরখাস্ত করতে হবে। এদেশে যারা ৫০০/১০০০ বৎসর যাবৎ বাস করছেন, তাদেরও দরখাস্তে যাবতীয় তথ্যাবলী পূরণ করে, তার সাথে প্রদত্ত তথ্যের সমর্থনে ডকুমেন্ট জুড়ে দিতে হবে। কাট-অফ ডেট ১৯৪৮ সালের ১৮ জুলাই। এই তারিখের পূর্বে যারা বর্তমান ভারত ভূখণ্ডে বসবাস করতেন, তাদের নাম তালিকায় প্রথম বারেই উঠবে, কিন্তু কাগজ দিতে হবে। ১৯৪৮ এর ১৮ই জুলাইয়ের পূর্বে এদেশে বসবাসের প্রমাণপত্র দিতে হবে।

  •  কে কী প্রমাণপত্র দেবে? 
যাদের ঐ তারিখের পূর্বের দলিল, বা কোনো সরকারী কাগজ আছে এবং দেখাতে পারবেন, তাদের নাম প্রাথমিক তালিকায় উঠবে। 
  • কাগজ যে জমা দেবে, সেটা কোনটা? অরিজিনাল, না অ্যাটেষ্টেড কপি? 
অরিজিনাল তো কেউ দেবে না। তাহলে যে অ্যাটেষ্টেড কপি জমা দেবে, তার সত্যতা যাচাই হবে। মূল কাগজ নিয়ে সরকারী দপ্তরে হাজির হতে হবে। শুধু মূল কাগজ দেখালেই হবে না। ঐ মূল কাগজ নকল কিনা, তা যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যাবে। ৭৩ বৎসর পূর্বের কাগজ সব সরকারী দপ্তরে সাজিয়ে রাখা নেই যে, ‘২০২০ সালে নাগরিক তালিকা হবে, সেখানে মানুষের এইসব কাগজপত্র লাগবে’, সেই ভেবে। সেই দপ্তর যদি ঐ কাগজের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চয়তা দেয়, তাহলেই সেইসব মানুষের নাম প্রাথমিক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে।

এতে সবচেয়ে বিপদে পড়বে আদিবাসী ও যাযাবর ভারতীয়রা, যারা কিনা এই ভারতের মূল অধিবাসী। তাদের তো কোনো কাগজপত্র নেই! বন জঙ্গল জবর-দখল করে তারা বাস করতো। সেই জায়গার কোনো দলিল পাট্টা তাদের নাই। সেজন্য আসামে প্রায় দু'লক্ষ আদিবাসী বে-নাগরিক হয়ে গেছে।

এই আদিবাসীরা ছাড়াও ভূমিহীন, নিরক্ষর, কৃষক,শ্র  দিনমজুরদের দুরবস্থারও সীমা থাকবে না। যার ভূমিই নেই, সে কী কাগজ দেখাবে?

এবার পূর্বপাকিস্তান বা বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুদের কথা ধরা যাক। তাদের কাছে একটা কাগজই চাওয়া হবে, এদেশে প্রবেশের বৈধ অনুমতিপত্র অর্থাৎ, বর্ডার স্লিপ ও মাইগ্রেশান সার্টিফিকেট। কয়জন সেই কাগজ সযত্নে সংগ্রহ করে রেখেছেন সরকারের জন্য? 

অনেক মানুষদের আমি ব্যক্তিগতভাবে জানি,তারা সেই কাগজ হারিয়ে ফেলেছেন। ঐ কাগজ গুছিয়ে রাখবে, না উমরকোট, মালকানগিরি, আন্দামান, মরিপঝারি ছুটবে? বেশীর ভাগ মানুষই তা হারিয়ে ফেলেছেন। তারাও ঘুষপেটিয়া বা অবৈধ প্রবেশকারীর সম্মান লাভ করবেন। তাই, সে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পদে চাকরি করে থাকলেও মিলিটারী, পুলিশ বা অন্যান্য কোনো চাকরির কোনো কাগজ কোনো কাজে লাগবে না। একটাই কাগজ চাইবে, কীভাবে ঢুকেছ? সেই কাগজ দেখাও। 


অনেকের নাগরিক কার্ড আছে, কোনো কাজেই লাগবে না। ওটা চাইবেই না। তাই দেখিয়ে কী লাভ? একটা মাত্র কাগজ দেখাও, এদেশে কীভাবে ঢুকেছো? 

✓✓বৈধভাবে না অবৈধভাবে? 

একজন বলছে, ‘আমার বাবা মিলিটারিতে চাকরি করেছেন ১৯৫৪ সাল থেকে, রিটায়ার করে মারাও গেছেন।’ 

ওসব চাইবে না, বন্ধু। 

একটাই কাগজ চাইবে, তোমার বাবা এদেশে প্রাণের ভয়ে রাতের অন্ধকারে ঢুকেছিল, না সোজা বর্ডার দিয়ে বুক চিতিয়ে বৈধ কাগজ নিয়ে ঢুকেছিল? 

বৈধভাবে প্রবেশের কাগজ দিলেই হবে না। ঢাকায় যাবে, করাচী যাবে, এই কাগজ ওই অফিস থেকে দিয়েছিল কিনা, যাচাই হবে। নকল কাগজও তো হতে পারে! সুতরাং এনকোয়ারি মাষ্ট। 

এইবার যারা কাগজ দেখাতে পারবে না,তারা ঝুলে থাকবে অবৈধ প্রবেশকারী বা শরণার্থী হিসেবে। সে কত বছর এদেশে সরকারী চাকরি করেছে, এম এল এ, এম পি, মন্ত্রী, আই এ এস হলেও অবৈধ প্রবেশকারী বা শরণার্থী। অন্যরা তার দিকে কৃপা বা করুণার দৃষ্টিতে তাকাবে। 

সহ্য  করতে পারবেন তো?

এইবার নাগরিকত্ব দেবার প্রশ্ন! 

আগে আপনার নিকট থেকে লিখে নিল, আপনি নিজেই দরখাস্তে লিখে দিলেন যে আপনি বৈধ কাগজ ছাড়া ভারতে ঢুকেছেন অর্থাৎ অপরাধী, অনুপ্রবেশকারী। পরম দয়ালু সরকার আপনাকে তাড়াচ্ছে না।

আহা!

কত দয়ার শরীর!

অবৈধ প্রবেশকারীকে থাকতে দিচ্ছে শুধু নয়, শরণার্থীর মর্যাদা দিচ্ছে, এত মহান আমাদের সরকার! আগের সরকার এদের জন্য কিচ্ছু করে নাই। এদিকে যে নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়ে শরণার্থী বানিয়ে দিচ্ছে, তা তলিয়ে দেখার ধৈর্য আমার স্বজাতির আছে কোথায়!

আগে আমাদের দিয়ে লিখিয়ে নেবে যে, আমরা অবৈধভাবে এদেশে প্রবেশ করেছি। তারপর, আমরা ঢুকে গেলাম তাদের হাতের মুঠোয়, এইবার নাগরিকত্ব দেবে কিনা, সেটা আর আমাদের হাতে থাকলো না। আসামে যেভাবে হয়েছে, সুপ্রীম কোর্টের নজরদারিতে সবকিছু পরিচালিত হয়েছে, এখানেও তাই হবে । আধা-সামরিক বাহিনীতে ছেয়ে যাবে বাংলা। পাঁচজনও একত্রিত হতে পারবেন না। শুধু কেন্দ্রকে ভোট দিয়ে একবার পশ্চিম বাংলার মসনদে বসতে দেন। তারপর দেখুন।

তৃণমূল যদি ফের ক্ষমতায় আসে, তখন তার মর্জির ওপর নির্ভর করবে, নাগরিকত্ব আইন লাগু করবে কিনা! বেশী ব্যাগড়বাই করলে, করতেও পারে। সেই ক্ষমতা বিজেপি সরকার ‘২০১৯ নাগরিকত্ব আইন’ পাশ করে সমস্ত রাজ্য সরকারের হাতে দিয়ে দিয়েছে। রাজ্য সরকার চাইলেই হয়ে যাবে। অবশ্য রাজ্য সরকার না চাইলেও লাগু করে দিতে পারে, কারণ নাগরিকত্ব বিষয়টি সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে।


এখন কী করবেন, স্বজাতি বন্ধুরা, গভীরভাবে ভাবুন। 

A bird in hand is worth two in the bush.

হাতে যে পাখিটি আছে, সেটির মাংস খাবেন? না সেটি উড়িয়ে দিয়ে, আকাশ পথে উড়ে যাচ্ছে হাজার পাখি, তাদের মাংস খাবেন? অর্থাৎ, আপনি নাগরিক আছেন, সেইটি ছেড়ে দিয়ে, শরণার্থী হয়ে পাকা নাগরিক হওয়ার ঝুঁকি নেবেন? না বর্তমানে নাগরিক আছেন, তাতে খুশী থাকবেন? ”


Collected from : Facebook

See the actual post below :

Log In or Sign Up to View

See posts, photos and more on Facebook.

Souvik Dey

Hello. My name is Souvik Dey. I am a B.Tech. 3rd year student. I did my diploma in civil engineering and currently pursuing BTech in Computer Science. My team and I run this blog together. Don't forget to share these articles with your friends. Thank you.

Post a Comment

Thank you for your valuable time.
We are fond of your comments.(but, do not spam)

Previous Post Next Post