মুখোমুখি ধারাবাহিকের ষষ্ঠ পর্ব পড়ুন অলীক চেতনা পত্রিকা দপ্তরে, লিখছেন লেখক দেবদাস কুুুণ্ডু। প্রতি মঙ্গলবার থাকছে শুধুমাত্র আপনাদের জন্য…
“গল্প : মুখোমুখি”
আগে যা ঘটেছে…
বিনোদনের তিন দিন :
সোমবার
কাবেরী তালুকদারের “পলাশী ও আমি”
মঙ্গলবার
দেবদাস কুুুণ্ডুর “মুখোমুখি”
বুধবার
শৌভিক দে-র ছোট গল্প ও কমিক সিরিজ
ষষ্ঠ পর্ব
শরীর মানে কিন্তু যৌনতা নয়।
সংগীতা জোর দিয়ে বলে, ‘শরীর ছাড়া যৌনতা হয়ও না।’
‘ছাড় ওসব কথা। তোর বয়ফ্রেন্ডের নাম তো বাবাই। তার সঙ্গে সম্পর্ক আছে তো?’
সরাসরি সে কথার জবাব না দিয়ে সংগীতা বলে, ‘ও আমার সমবয়সী। আমার একটু এজেড পুরুষ পছন্দ।’
অনির্বাণ চমকে গিয়ে বলে, ‘বুড়োকে বিয়ে করবি নাকি?’
‘এজেড মানে কি বুড়ো?’
অনির্বাণ বলে, ‘তুই একটু ব্যাখ্যা করত ব্যাপারটা।’
ট্যাক্সির হালকা অন্ধকারে সংগীতা একটা রহস্যময় হেসে উঠলো, ‘আমার থেকে ১০-১২ বছরের বড় পুরুষ আমার পছন্দ।’
‘কেন?’
‘সে আমাকে খুব খুব ভালোবাসবে। আমিও তার উপর নির্ভর করতে পারবো। একটা নিশ্চিত আশ্রয় পাবো। সে আমার কথা শুনে চলবে। আমার শ্বাস-প্রশ্বাসে তার বাঁচা-মরা ওঠা-নামা করবে। তবেই না বুঝবো আমার মেয়ে জীবনের কোথাও একটা মূল্য আছে।’
‘সমবয়সী হলে বুঝি এমনটা হবে না?’
হচ্ছে কই, দেখলাম তো কয়েক বছরের সম্পর্কে। পরস্পরের বোঝাপড়াটাই হয় না। মাঝখান থেকে যন্ত্রণা উঠে আসে।
অনির্বাণ বুঝতে পারছে সংগীতার ভিতর সত্যিই একটা যন্ত্রণা আছে। বাইরে থেকে এতটুকু আঁচ পাওয়া যায়নি।
ট্যাক্সি বাইপাসের রাস্তা ধরে ছুটছে। আগে পিছনে অগুণিত গাড়ি। তাদের গাড়ির ভিতর স্বল্প আলোয় সংগীতাকে অন্য মেয়ে মনে হচ্ছে। বিশ্বাস হচ্ছে না এই সংগীতাকে সে পাঁচ বছর পড়িয়েছে!
সংগীতা ব্যাগ থেকে রং বের করে টিয়া পাখির মতো লাল করে ঠোঁট। যেন ঠোঁট বিপ্লবের রং, বলে, ‘আমি নিছক যৌনতা বা যাকে পর্ণগ্রাফি বলে তার কথা বলতে চাইনি। যে যৌনতা মানুষের জীবনচক্রে সক্রিয়, মানুষ যৌনতার জন্য লড়াই করে, হিংস্র হয়, বিপন্ন হয়, মৃত্যুকে পর্যন্ত তুচ্ছ করে। আবার জীবনকে কাঙালের মতো ভালোবাসতে শেখায়। এককথায় মানুষের অস্বস্তিকে জড়িয়ে যে যৌনতা, তাকে তুমি গল্পে আনো।’
অনির্বাণকে কোন কথা বলতে না দিয়ে পিয়ারলেস ব্রিজের কাছে ট্যাক্সি থামায় সংগীতা। নেমে বলে, ‘আসি।’
একটা ঘোরের মধ্যে অনির্বাণ বলে, ‘আয়…’
ট্যাক্সি ব্রিজের ওপর ওঠে।
অনির্বাণ সোজা হয়ে বসে। বুকের ভিতর একটা নিঃশ্বাস চেপেছিল। সেটা বের করে দিয়েও স্বস্তি পাচ্ছে না। সংগীতা তো কথাগুলো মিথ্যে বলেনি। স্বপ্না তো তাকে বিপন্ন করে চলে গিয়েছিল। রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল। একদিন সে একটু ভয় অস একটু সাহস নিয়ে চলে গেল যৌনপল্লিতে। বারবার মনে হয়েছে, এভাবে বাঁচাটা তীব্র যন্ত্রণার। বিয়ে করলেই হয়। কিন্তু দাদা বিয়ে করেনি, বোনের বিয়ে হয়নি, ঘরের প্রবলেম। সবচেয়ে বড় অনিশ্চয়তা টিউশন পেশাটি নিয়ে। বেশ কয়েক দিন যৌনপল্লিতে গিয়ে ফিরে এসে স্নান করত। ঠাকুমা বলত, ‘এত রাতে চান করিস ক্যান বাপী? জ্বর হইবো।’
হলো জ্বর। এরপর এলো রুমা। সে শরীরের উপরের অংশ দিয়ে যৌনতার অর্ধেক পর্দা খুলত। তখন যৌনতার চেয়ে বেশি ভালোবাসার কাঙাল হয়ে পড়েছিল সে। সে জানত ভালোবাসা থাকলে শরীর একদিন যৌনসুখের বৃষ্টি দেবেই। কেন যে রুমা এক বছরের সম্পর্কের ইতি টেনে এক হাইকোর্টের উকিলকে বিয়ে করে উত্তরবঙ্গ চলে গেল। তখন তার মনে হয়েছিল, তার বাঁচা মরা নারীর হাতের পুতুল। কই এসব নিয়ে তো সে লেখার কথা ভাবেনি? কেন? অশ্লীলতা প্রকট হয়ে উঠবে? জীবনে ঘটতে পারলে লেখায় আসবে না কেন? ভয়, অস্বস্তি নাকি শিক্ষকের মুখোশটা খুলে যাবে, এই আতঙ্কে!
ক্রমশ…
… সবচেয়ে সুন্দর কমেন্টদাতার জন্য রয়েছে সপ্তাহের শেষে বিশেষ সম্মান …
গল্পটি এখনই সম্পূর্ন পড়তে হলে চলে যান নিচের বক্সে দেওয়া ঠিকানায় :
প্রকাশক : শৌভিক দে
প্রকাশনার তারিখ : ৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১